প্রতিদিন মা দিবস ।। সফিউল্লাহ আনসারী


প্রতিদিন মা দিবস ।। সফিউল্লাহ আনসারী
মা কথাটি ছোট্র অতি, কিন্তু জেনো ভাই, মায়ের চেয়ে ত্রিভূবনে আপন কেহ নাই’ চির সত্যি। মায়ের চেয়ে আপন আর কে‘ইবা আছে। ‘মা’ ছোট্ট একটা শব্দ, কিন্তু শব্দটির পরিধি বিশাল! সৃষ্টির সেই আদি লগ্ন থেকে মধুর এই শব্দটা শুধু মমতার নয়, ক্ষমতারও যেন সর্বোচ্চ স্থান দখল করে আছে৷ মা‘র অনুগ্রহ ছাড়া কোনো প্রাণীরই প্রাণ ধারণ করা সম্ভব নয়, হোক সে মানুষ কিংবা কোন প্রাণী। আর যার এতো মমতা আর ক্ষমতা তিনি আমাদের গর্ভধারিনী, আমার মা, মা জননী আমার চির সুখের ঠিকানা৷ মায়ের মতো এতো নিরাপদ আশ্রয়স্থল আর পৃথীবিতে দ্বীতিয়টি নেই।
গর্ভধারীনি, জন্মদাত্রী হিসেবে সবার ওপরে সকলের জীবনে মায়ের স্থান।চির আপন, সবচে প্রিয়, এই মাকে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আর সম্মান জানানোর জন্য কোন বিশেষ দিনের প্রয়োজন নেই৷ তবুও নিদিষ্ট একটা দিন হিসেবে-মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার ‘মা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়,যার সূত্রপাত ১৯১৪ সালের ৮ই মে থেকে(তথ্য সংগৃহীত)। যদিও মাকে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা জানানোর জন্য নিদিষ্ট দিনক্ষণ ঠিক করে হয় না, এবং অনেকেই তা মানতেও নারাজ, তবুও মাকে গভীর মমতায় স্মরণ করার দিন হিসেবে এই দিনটি শ্রদ্ধায়-মমতায় মোড়ানে স্মরণীয় একটি অনন্য দিন।মাকে ভালোবাসতে যেমন দিন লাগেনা,তেমনি সন্তানের জন্য মায়ের স্নেহ-মায়া-মমতা আর নীখাদ ভালোবাসা শিশুকাল থেকে বৃদ্ধ বয়সেও একই রকম।
পরিবার-সামজিক বন্ধনই নয় ধর্মীয় মূল্যায়নে মায়ের রয়েছে অনেক অনেক সম্মান। ইসলাম ধর্মে ‘মায়ের পায়ের নীচে বেহেস্ত’, খ্রিষ্টধর্মে রয়েছে ‘মাদার মেরির’ বিশেষ গুরুত্ব৷আর হিন্দু ধর্মে? মা, মা আর মা । সকল ক্ষেত্রেই মায়ে জয় জয়কার। তুলনাহীনা, অমুল্য সম্পদ মা জননীর জন্য কিনা বছরে একটা মাত্র দিন!ভাবা যায় না ! তবে হ্যাঁ এ দিবসটা শুধু তাচ্ছিল্য বা মাকে একটা দিনে আটকানোর জন্য নয় বরং মায়ের সম্মানকে আরো বাড়িয়ে দিতেই। সন্তানের কাছে মা যেমন জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে গুরুত্বপুর্ণ ও পরম পুজনীয় তেমনি প্রতিটা সন্তানের কাছে প্রতিটি দিনই যেনো ‘মা দিবস’৷
চিরদু:খী যে মা জন্মদাত্রী থেকে শুরু সন্তানের জীবন গড়ার কারিগর হয়ে সবকিছুতেই শিক্ষকের ভূমিকা পালন করেন। ছোটবেলায় হাঁটতে শিখিয়েছে, কথা বলতে শিখিয়েছেন, মুখে খাবার তুলে দিয়েছেন,কতো যন্ত্রনা সয়ে আমাদের বড় করেছেন, সেই মাকে বৃদ্ধ বয়সে কুলাঙ্গার সন্তানেরা, তাদের স্ত্রীরা দুরদুর করে তাড়িয়ের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যে অযত্ম-অবহেলা করে থাকে। বৃদ্ধ বয়সে মা-বাবারা সন্তানের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়লে, যেমন সন্তানরা ছোটবেলায় থাকে।অথচ সেদিনের কথা ভূলে তাঁদের হাতে তিল তিল করে জীবনধারী সন্তানটি বাবা-মা কে পাঠিয়ে দিচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমে। এই সন্তানের জন্য বিশ্ব মা দিবস আর প্রতিদিন কোনই গুরুত্ব বা সম্মানের নয় বরং অভিশাপের। মায়ে আর বাবার অভিশাপ শুধুই সন্তান নামক অমানুষদের জন্য !
আসুন অন্তত একটি দিনের আনুষ্ঠানিকতায় নিজেদের বন্ধি না করে মায়ের নীখাদ, নির্মল পৃথীবির শ্রেষ্ঠ ভালোবাসাকে প্রতিটি দিন আমাদের জীবনে একাকার করে নিই, আর মনে মনে ক্ষনে ক্ষনে মুখে মুখে সুখে দু:খে চিৎকার করে বলি-ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি তোমায় মা ও মা; মাগো আমার মা। মা তোমায় ভালোবাসি জীবনের চাইতেও বেশীৃ.মা দিবসকে একটা দিনে সীমাবদ্ধ না করে প্রতিদিন পালন করি মা দিবস। গানের সুরে বলি-“আমারই মা,মা জননী,আমার সুখের ঠিকানা। কান্নাকে হায় শুধু ভুলে যায়,সাজাতে আমারই আঙিনা, আমারই মা, মা জননী, আমারই সুখের ঠিকানা”। স্বার্থক হোক মা দিবস। বিশ্বের প্রতিটা মাকে জানাই হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা এবং গভীর শ্রদ্ধা।